হাওজা নিউজ এজেন্সি: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন নাসের রাফিয়ি গত রাতে ইরানের ধর্মীয় শহর কোমে অবস্থিত হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.আ.)'র পবিত্র মাজারে এক দ্বীনী মাহফিলে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, সূরা আল-ইমরানের ৩৩ ও ৩৪ নং আয়াতে 'ইসতাফা' শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে, যার অর্থ 'বাছাই করা'। এই শব্দটি কুরআনে নবী ও আল্লাহর অলীগণের ক্ষেত্রে বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে।
তিনি যোগ করেন, নবুওত ও রিসালাতের জন্য নির্বাচিত হওয়া ব্যক্তির সক্ষমতা ও যোগ্যতার উপর নির্ভরশীল। এই মর্যাদা লাভের জন্য বিশেষ যোগ্যতা প্রয়োজন। এজন্যই আল্লাহ সমাজের হেদায়েতের জন্য বিশেষ ব্যক্তিদের নির্বাচন করেন।
হুজ্জাতুল ইসলাম রাফিয়ি বলেন, যখন হজ ও জিয়ারত সংস্থা কাফেলাগুলোর জন্য ম্যানেজার ও ধর্মীয় নেতা নিয়োগ করে, তখন এই নেতাদের অবশ্যই বিশেষ যোগ্যতা থাকতে হবে যাতে তারা কাফেলা সফলভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই প্রখ্যাত শিক্ষক উল্লেখ করেন, ৩৩ নং আয়াতে 'ইসতাফা' শব্দটি হযরত আদম (আ.) ও হযরত নূহ (আ.)-এর প্রতি ইঙ্গিত করে, যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে সমাজের হেদায়েতের জন্য নবুওত ও রিসালাত লাভ করেছেন। একইভাবে হযরত ইব্রাহীম ও ইমরান (আ.)’র বংশধরগণও আল্লাহর নির্বাচিত, যারা পরবর্তী নবীগণের ধারাবাহিকতা।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কিছু নবীর রিসালাত সার্বজনীন, আবার কিছু নবীর রিসালাত আঞ্চলিক, যা তাদের মিশন ও দায়িত্বের ধরনের উপর নির্ভর করে। এটি ৩৩ নং আয়াত থেকে প্রাপ্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ৩৪ নং আয়াতে 'ধুররিয়্যাত' (বংশধর) এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা বংশপরম্পরাকে নির্দেশ করে।
তিনি বলেন, মানুষের ব্যক্তিত্ব বংশগতি, পরিবেশ ও লালন-পালনের মাধ্যমে গঠিত হয়। এজন্যই হাদীসে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, এমন নারীকে বিয়ে কর যারা ভালো বংশ ও মর্যাদার অধিকারী।
হুজ্জাতুল ইসলাম রাফিয়ি শেষে উল্লেখ করেন, আল্লাহ তাআলা মানুষের হেদায়েতের জন্য সকল উপায় প্রস্তুত করেছেন। হেদায়েতের উপায়গুলো আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয়ই। আকল-বুদ্ধি, বিবেক ও ফিতরাত হলো আভ্যন্তরীণ উপায়, আর নবী-রাসূল প্রেরণ হলো বাহ্যিক উপায়। তাই কেবল বিবেক ও আভ্যন্তরীণ উপায়ের উপর নির্ভর করা যায় না, বরং এই ঐশী হেদায়েতকে সুদৃঢ় করতে বাহ্যিক উপায়ের প্রয়োজন। বাহ্যিক উপায় ছাড়া আমরা পথভ্রষ্ট হয়ে যাব।
আপনার কমেন্ট